ব্য’ক্তিগত গ্যারান্টি অথবা শিক্ষা সনদ জামানত দিয়ে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন নতুন উদ্যোক্তারা। চার শতাংশ সুদে ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর বয়সের উদ্যোক্তারা এই ঋণ নিতে পারবেন। গত সোমবার এই শর্ত দিয়ে ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যো’গে পৃষ্ঠপোষকতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের
গঠিত ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ঋণ নীতিমালা জা’রি করা হয়। নীতিমালার আওতায় স্টার্ট-আপ বলতে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে নতুন পণ্য, সেবা, প্রক্রিয়া বা প্রযু’ক্তির উদ্ভাবন ও অগ্রগতিকে বোঝাবে। এই প্রযু’ক্তিগত উদ্ভাবিত সমাধানগুলো ভবিষ্যতে বড় ধ’রনের বিস্তৃতিযোগ্য হতে হবে।
তাছাড়া, ব্যবসায়িকভাবে টেকসই, বাণিজ্যিকভাবে সফল বিনিয়োগকারীদের ওপর অনুপাতহীন আয় সৃষ্টি করে, যা সফল হলে দেশের অভ্যন্তরে ক’র্মসংস্থান বাড়বে ও সম্পদ বাড়বে, এমন নতুন ও সৃজনশীল ব্যবসায়িক উদ্যো’গে এই ঋণ মিলবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়। প্রতিটি ব্যাংকই তাদের গ্রাহকদের এই পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দিতে
কে’ন্দ্রীয় ব্যাংকের স’ঙ্গে অংশগ্রহণমূলক চুক্তি ক’রতে পারবে। প্রত্যেক ব্যাংক যে পরিমাণ ঋণ দেবে তার ১০ শতাংশ নারীগ্রাহককে দিতে হবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
তবে এই ঋণ গ্রাহকদের এককালীন দেওয়া হবে না। প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনার ওপর ভিত্তিতে ন্যূনতম ৩ কিস্তিতে এই ঋণ ছাড় করবে ব্যাংক। ঋণের বিপরীতে
বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে তহবিল দেবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের স’ঙ্গে সর্বোচ্চ ৩.৫০ শতাংশ সুদ যোগ করে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ৪ শতাংশ সুদ আদায় ক’রতে পারবে। সরল সুদে এই ঋণ দেওয়া হবে। এই উদ্যোক্তাদের থাকতে হবে সরকারি কিংবা অনুমোদিত বেসরকারি উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্যোক্তা উন্নয়ন,
ব্যবসা পরিচালনা, বাজারজাতকরণ প্রভৃতি বিষয়ে অথবা অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে (পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, যন্ত্রপাতি মেরামত প্রভৃতি) সাফল্যজনকভাবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সনদ। প্রাতিষ্ঠানিক কারিগরি শিক্ষা না থাকলে উদ্যোক্তার সংশ্লি’ষ্ট বিষয়ে যথাযথ বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও নতুন উদ্যো’গ পরিচালনার সক্ষ’মতা থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ৫ বছরের জন্য এই ঋণ পাওয়া যাবে।
গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ১ বছর। ঋণ পরিশোধ শুরু হলে তিন মাসে বা ছয় মাসে কিস্তি আ’কারে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একই গ্রাহক একাধিক প্রকল্প বা একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। একজন গ্রাহক একবারই এই তহবিল থেকে ঋণ পাবে। তবে প্রথমে ১ কোটি টাকার কম ঋণ নিলে পরে প্রকল্পের সম্ভাবনা বিবেচনায় ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ বাড়ানো যাবে।
জামানতের বিষয়ে কে’ন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়, ব্যাংক ও ঋণগ্রহীতা উভ’য়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্য’ক্তির অ’ঙ্গীকারনামাই ব্য’ক্তিগত গ্যারান্টি হিসেবে বিবেচিত হবে। দুজনের বেশি ব্য’ক্তিগত গ্যারান্টি বাধ্যতামূলক ক’রতে পারবে না ব্যাংক। তাছাড়া ডিগ্রিধারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ অথবা কারিগরি প্রশিক্ষণের সনদ জামানত হিসেবে ব্যাংকে
জমা রাখতে হবে। গত ১১ মা’র্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় স্টার্ট-আপ উদ্যো’গে ঋণ সহজলভ্য ক’রতে এই তহবিল গঠনের সিদ্ধা’ন্ত নেওয়া হয়। সোমবার এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রো’গ্রামস বিভাগ থেকে জা’রি করা নীতিমালার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোরও নিজস্ব তহবিলের মাধ্যমে একটি স্টার্ট-আপ ফান্ড গঠন ও এর নীতিমালা প্রণয়নের নির্দে’শনা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ব্যাংকগুলো ২০২১ সালের পর থেকে পরবর্তী ৫ বছরে প্রতিবছর তাদের পরিচালন মুনাফা থেকে ১ শতাংশ স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে বিতরণের
লক্ষ্যে তহবিল আ’কারে সংরক্ষণ করবে। এই তহবিলের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিলের নীতিমালার স’ঙ্গে সংগতিপূর্ণ একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দে’শনা দেওয়া হয়।